দেওয়ানগঞ্জে সরকারি অফিস ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনা রক্ষা করেছে বিএনপি: উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক
নিজস্ব প্রতিবেদক: গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দিন বিএনপি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন সরকারি অফিস এবং রাষ্ট্রীয় স্থাপনা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছে বলে দাবি করেছেন দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাঈদ বিন আনোয়ার সজীব।
স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের ১ মাস পূর্তি উপলক্ষে তিনি একথা বলেন। তিনি বলেন, সেদিন সারাদেশের বিভিন্ন থানা, উপজেলা কমপ্লেক্স এবং সরকারি স্থাপনায় হামলা অগ্নিসংযোগ, নাশকতা, ভাঙচুর চালানো হলেও দেওয়ানগঞ্জে সেরকম উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটেনি।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক সহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন তারা এবং নেতাকর্মীরা থানা সহ বিভিন্ন সরকারী স্থাপনা রক্ষায় এগিয়ে এসেছিলেন। এসব স্থাপনায় ভাঙচুর হতে দেয়নি, কিছু কিছু স্থানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলেও সেসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে দাবি করেন।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, সারাদেশে কয়েক শতাধিক থানায় হামলা, নাশকতার ঘটনা ঘটে দেশের বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়। অনেক থানা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন থানা থেকে লুট হয় পুলিশের অস্ত্র এবং গুলা বারুদ। দেশের বিভিন্ন থানা আক্রান্ত হলেও এক্ষেত্রে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানা উপজেলা পরিষদ ভবন সহ বিভিন্ন স্থাপনা নিরাপদ ছিল।
দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানা সূত্রে জানা যায়, সেদিন থানায় অবস্থানরত পুলিশ বাহিনীরা সদস্যরা কোন আক্রমণের শিকার হয়নি। এবং থানায় কোন ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। এ ব্যাপারে দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ বিপ্লব কুমার বিশ্বাস জানান, সরকার পতনের পর ৫ই আগস্ট দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানা কোন আক্রমণের শিকার হয়নি। বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন, জামায়াত, হেফাজত সহ বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ নিজ উদ্যোগে এগিয়ে এসেছেন। থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। সেদিন সকল পুলিশ সদস্যরা নিরাপদ ছিল।
দেওয়ানগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন কান্তি চৌধুরী বলেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে পুলিশি কার্যক্রম স্বাভাবিক করতে গিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহ সকলের সহযোগিতা পেয়েছি, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় এড়াতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষায় তারা আন্তরিক ছিলেন।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স,বলেন সেদিন সারা দেশের সংঘর্ষ হলেও আমার উপজেলা কমপ্লেক্সে কোন ভাঙচুর এবং নাশকতার ঘটনা ঘটেনি। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাধারণ মানুষ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছেন।
দেওয়ানগঞ্জ পৌর বিএনপি’র সদস্য সচিব আতিকুর রহমান সাজু বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশে যখন কোন সরকার ছিল না, পুলিশ কোন ফাংশন করে নাই, দেশে আইন-শৃঙ্খলা ছিল না তখন জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা কোন সংঘাত, সহিংসতা হতে দেইনি, মানুষকে নিরাপদে রেখেছিলাম। কেন্দ্রীয় বিএনপি’র কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত সাহেবের নির্দেশনায় আমরা অত্যন্ত কষ্ট করে মানুষকে শান্ত রেখেছিলাম। দেওয়ানগঞ্জের কোথাও হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
জেলার অন্যতম ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান জিল বাংলা সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান বলেন, ৫ তারিখে মিল এরিয়ায় কোন সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি, আমাদের নিরাপদ রাখতে সেই ক্ষেত্রে বিএনপি’র নেতৃবৃন্দের অবশ্যই ভালো ভূমিকা ছিল।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাঈদ বিন আনোয়ার সজীব এ ব্যাপারে বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি’র) এর কেন্দ্রীয় কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত সাহেবের নির্দেশনায় সেদিন আমরা মানুষের জনমালের নিরাপত্তা বিধান করেছি। দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানা সহ কোন সরকারি স্থাপনায় হামলা হতে দেইনি। সার্বিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আমরা সজাগ ছিলাম। পৌর বাজারের ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে দেখা করে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছি। আমরা কথা দিয়েছিলাম কোথাও কোন চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং হামলার ঘটনার মুখোমুখি হলে, সেটা দলের ভেতরের হোক বাইরের হোক আমরা সাথে সাথে ব্যবস্থা নেব। ৫ তারিখ থেকে অদ্যাবধি আমাদের এসব তৎপরতা জনগণকে আশ্বস্ত করেছে এবং তারা নিরাপদে আছে। শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে দেওয়ানগঞ্জেও কিছু কিছু স্থানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে এ ব্যাপারে তিনি বলেন, কিছু কিছু স্থানে যেসব ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে সেসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা, ব্যক্তিগত পর্যায়ে দ্বন্দ্বের কারণে ঘটেছে। আমরা অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছি এসব কর্মকাণ্ডের সাথে বিএনপি’র দলীয় কোন নেতা কর্মীর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। অনেকে অতি উৎসাহী হয়ে এসব করেছে। আমরা দেশের অবস্থা স্বাভাবিক রাখতে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছি।