সাহিত্য

যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে

নয়ন আসাদ ।।

বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের প্রয়াণ দিবস আজ। এই দিনে (১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র) ৭৭ বছর বয়সে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তিনি তার স্বল্প কবি জীবনে গেয়েছেন মানবতার জয়গান। মানুষের অধিকার, ন্যায্যতা ও সমতার কথা তিনি তার কলমে ধারণ করে হয়ে উঠেছিলেন বাংলা অঞ্চলের সব মানুষের প্রিয় কবিতে।

তিনি তার লেখায় প্রেম, দ্রোহ, কোমলতা, কঠোরতা সব কিছুই ধারণ করেছিলেন অনন্য প্রতিভায়। শাসক শ্রেণীর শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল তার কলম। সোচ্চার ছিল ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধে। বাংলা সাহিত্যে তিনি তারুণ্যের প্রতীক। এক রহস্যময় বিদ্রোহী চরিত্র। তিনি দৃঢ় কন্ঠে যেমন সত্য উচ্চারণ করেছেন তেমনি থেকেছেন আপসহীন।

কারাবরণ করেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন কিন্তু সত্য বলতে পিছপা হননি কখনো। তিনি সব ধরনের শক্তিকে অগ্রাহ্য করে, চাটুকারিতা আর পা-চাটার বিরুদ্ধে তিনি বলতে শিখিয়েছিলেন, বল উন্নত মম শীর। বলেছিলেন, মহা- বিদ্রোহী রণ-ক্লান্তআমি সেই দিন হব শান্ত,যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন-রোল, আকাশে বাতাসে ধ্বনিবে না,অত্যাচারীর খড়গ কৃপাণ ভীম রণ-ভূমে রণিবে না –বিদ্রোহী রণ-ক্লান্তআমি আমি সেই দিন হব শান্ত!

শোষকদের উদ্দেশ্যে তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, আসিতেছে শুভদিন,দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা শুধিতে হইবে ঋণ! কাজী নজরুল ইসলাম কথা বলেছিলেন মানুষের জন্য। সাহিত্য মানে শুধু মনোরঞ্জন নয় বরং সাহিত্য অন্যায়ের বিরুদ্ধে কার্যকর অস্ত্র, শোষনের বিরুদ্ধে একটি শাণিত হাতিয়ার তা বাংলা সাহিত্যে দেখিয়েছেন কাজী নজরুল ইসলাম। আর একারণেই তিনি একটি জাতির আশা-আকাঙ্খা ধারণ করে সকল দল-মত-ধর্ম নির্বিশেষে উঠেছিলেন গণমানুষের কবি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *