আগুনের স্ফুলিঙ্গে রাঙা ফাগুনের এক বিকেলের কথা
নয়ন আসাদ: ১৯৫২ কিংবা বাংলা ১৩৫৯। শাসকের বিধি-নিষেধ ছিন্ন করে কোটি মানুষের ভাষার মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় রাজপথ প্রকম্পিত করলেন কিছু সাহসী মানুষ। মিছিলে মিছিলে, স্লোগানে, দ্রোহের ভাষায় তৈরি হল সাহসের এক স্ফুলিঙ্গ। ফাগুনের এক বিকালে সাহসের সেই স্ফুলিঙ্গ রক্তাত্ত হল শাসকের বুলেটের আঘাতে। ফাগুনের সেই দিনটি ইংরেজী ২১ ফেব্রুয়ারি বা বাংলা তারিখের হিসেবে ৮ই ফাল্গুন।
সালাম ,বরকত , রফিক, জব্বার, সফিউর সহ শহীদ হলেন অনেকে। অনেক প্রাণের রক্ত সেদিন রাজপথকে রঞ্জিত করেছিল। সেই রক্ত বৃথা যায়নি। সেই রক্ত উন্বেষ ঘটিয়েছি একটি জাতীয় গণচেতনার। গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে জাতীয় ঐক্য। বাংলাদেশ সৃষ্টির পেছনে বা স্বাধীনতার পেছনে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠার পেছনে ভাষা আন্দোলনের বলিষ্ঠ প্রভাব এই আন্দোলনকে করে তুলেছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই স্বাধিকার আন্দোলন আমাদের শিখিয়েছিল অন্যায্যতার প্রতিবাদ করতে। সকল ভয় মোকাবেলা করে অধিকারের কথা বলতে। বাঙালি জাতিসত্তা ও বাংলাদেশের সাথে এই আন্দোলন মিশে আছে অত্যন্ত গভীরভাবে।
ভাষা শহীদ দিবস আমাদের যেমন জাগতে শিখিয়েছিল তেমনি আমাদেরকে একত্রিত করেছিল একক পরিচয়ে। কালের পরিক্রমায়, অসংখ্য মানুষের রক্তে আমরা ভাষা পেয়েছি, দেশ পেয়েছি, পেয়েছি সুদীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের গৌরবউজ্জ্বল ইতিহাস। যা জাতি হিসেবে আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগায় প্রতিনিয়ত। ভাষা শহীদ দিবস আমাদেরকে উজ্জীবিত করুক। আমরা দেশকে ভালোবাসি, বাংলাকে ভালোবাসি। কবির ভাষায়,
মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা!
তোমার কোলে, তোমার বোলে, কতই শান্তি ভালবাসা!