জামালপুর পৌরসভা: নর্দমায় আবর্জনা, সড়ক জলাবদ্ধ
প্রথম আলো : মুল লেখার লিংক : সামান্য বৃষ্টিতে জামালপুর পৌরসভার বেশির ভাগ সড়ক জলাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। এসব সড়ক থেকে পানি নামতে দীর্ঘ সময় লাগছে। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পৌরসভার বাসিন্দাদের।
পৌরসভার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই সড়কে জলাবদ্ধতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। পৌর এলাকার বিভিন্ন মহল্লা ও প্রধান সড়কের দুই পাশে অপরিকল্পিতভাবে নর্দমা নির্মাণ করা হয়েছে। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় ময়লা-আবর্জনায় ভরে আছে নালাগুলো। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় পানি জমে থাকে। গত বছরও শহরে তেমন জলাবদ্ধতার সমস্যা ছিল না। বৃষ্টি নামার কিছুক্ষণের মধ্যেই পানি নেমে যেত। এ ছাড়া শহরে অসংখ্য পুকুর ছিল। বৃষ্টি হলে পানি ওই পুকুরগুলোয় চলে যেত। কিন্তু অধিকাংশ পুকুর ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে এখন পানিনিষ্কাশন কঠিন হয়ে পড়েছে।
গতকাল শনিবার বেলা একটার দিকে পৌর এলাকায় টানা ২০ মিনিট বৃষ্টি হয়। এতে অনেক সড়কে পানি জমে যায়। সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের প্রধান সড়কের পুরোনো পৌরসভার গেট থেকে লম্বাগাছ এলাকা পর্যন্ত হাঁটুপানির মধ্য দিয়ে যানবাহন চলছে। সড়কের দুই পাশে অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও পানি ঢুকেছে। একই অবস্থা শহরের ব্যস্ততম এলাকা হিসেবে পরিচিত পাঁচ রাস্তা মোড়ের। এ ছাড়া মৃধাপাড়া, মালগুদাম, কলেজ রোডের শফি মিয়ার বাজার এলাকা, স্টেশন রোড, ইকবালপুর, চামড়াগুদাম মোড়, কাচারিপাড়া ও মিয়াপাড়া রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানির মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে যানবাহন চলাচল করছে। পানি থাকায় সড়কে যানবাহনের সংখ্যাও কমে গেছে। পানি মাড়িয়ে কষ্টে চলাচল করছেন শহরবাসী।
পুরোনো পৌরসভা গেট এলাকায় কাপড়ের দোকান রয়েছে ব্যবসায়ী রমজান আলীর। দোকানে যাতে পানি ঢুকতে না পারে, সে জন্য তিনি এ বছর দোকানের সামনে প্রায় এক হাত উঁচু করে প্রাচীর তুলেছেন। তিনি বলেন, ২০ মিনিটের বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে গেছে। সন্ধ্যায় আগে আর পানি নামবে না। দেড়-দুই ঘণ্টা টানা বৃষ্টি হলে পানি নামতে একদিন লেগে যায়।
পাঁচ রাস্তা মোড়ে জুতা হাতে নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন শহরের বাসিন্দা জিয়াউল হক। তিনি বলেন, ‘সামান্য বৃষ্টি হলেও আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। রাস্তায় পানি থাকার সুযোগে যানবাহনের ভাড়াও বাড়িয়ে দেন চালকেরা। শহরের ব্যস্ততম এলাকা পাঁচ রাস্তা মোড়। এখানে হাঁটুপানি। পৌরসভায় পর্যাপ্ত নর্দমা রয়েছে। কিন্তু সেগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরে আছে। ফলে পানিনিষ্কাশন হচ্ছে না।’
কাঁচারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা নাসরিন সুলতানা বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। শহরের রাস্তা ডুবে যায়। নর্দমার ময়লা পানি বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে দুর্গন্ধ ছড়ায়। ছেলেমেয়েরা স্কুল-কলেজে ঠিকমতো যেতে পারে না। ৩০ মিনিটের বৃষ্টিতেই রাস্তা ও মহল্লা একদিন জলাবদ্ধ থাকে। পানি নেমে যাওয়ার পর রাস্তাঘাট কাদায় ভরে থাকে সারাদিন। ময়লা-আবর্জনার পানি মাড়িয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। কিন্তু পৌরসভার লোকজনের পানি সরাতে তৎপরতা দেখা যায় না।
পৌরসভার মেয়র মির্জা সাখাওয়াতুল আলম বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। শহরের প্রধান সড়কের দুই পাশে নতুন করে বড় আকারের নর্দমা নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া যেসব এলাকায় জলাবদ্ধতা বেশি, সেখানকার রাস্তার দুই পাশেও নর্দমা নির্মাণ করা হবে। কিন্তু বরাদ্দ না থাকায় এসব নির্মাণকাজ শুরু করা যাচ্ছে না। বর্তমানে যেসব নর্দমা রয়েছে, সেগুলো পরিষ্কার রাখার চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য করুন